বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই এপ্রিল, ২০২০
বস্তির ঘরে ঘরে তারুণ্যের ভালোবাসা- আবু রায়হান মিকাঈল
দ্যা ভয়েস অফ ঢাকা লেখক প্রতিবেন ডেস্ক: তারুণ্য যেখানে উদ্ভাসিত, ভালোবাসা সেখানে প্রস্ফুটিত। দুঃসময়ে দুর্গম গিরিপথ পাড়ি দিয়ে তারুণ্যের জয়ধ্বনি দেখেছে সবাই। তারুণ্যের ঐক্য মহাসংকটেও দেখাতে পারে স্বপ্ন, এনে দিতে পারে একটি স্বর্ণালী প্রভাত। নতুন দিনের স্বপ্ন দেখা একঝাঁক তারুণ্যের ভালোবাসায় মোড়ানো দিনলিপিগুলো মেলে ধরছি আজ।
সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে অন্য সংগঠনের মতো নয় এটি। ২০১১ সাল থেকে অরাজনৈতিক এ সংগঠনটি পথশিশুদের শিক্ষাদান, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপরে সচেতনতামূলক কর্মসূচীসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছে। এ সংগঠনের সদস্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট সম্পন্ন করা একঝাঁক তরুণ এই সংগঠনটির স্বপ্নদ্রষ্টা। ইতোমধ্যে তাদের সংগঠনটি একটি আস্থার জায়গায় উপনীত হয়েছে। বর্তমানে সংগঠনটি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য সুইচ বিদ্যা নিকেতন ও সুইচ তাহমিনা বানু স্মৃতি নামে দুটি স্কুল পরিচালনা করছেন। প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে সেখানে। এছাড়াও ২০১৬ সাল থেকে অমর একুশে বইমেলায় শারীরিক প্রতিবন্ধী ও শিশুদের জন্য ফ্রি হুইল চেয়ার সেবা দিয়ে আসছে সংগঠনটি।
বর্তমানে বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে স্তব্ধ পুরো বাংলাদেশ। নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য সময়টা যেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়াইয়ের মতো। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকার বস্তিবাসির অবস্থা আরও নির্মম। দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে বস্তিবাসির পাশে দাঁড়িয়েছে সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। ১০ হাজার পরিবারের নিয়মিত খাদ্য সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
ঢাকা উদ্যান এবং গাবতলীতে অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করেছে সংগঠনটি। ক্যাম্পের মাধ্যমে বাসায় বাসায় গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থাও করছেন তারা। খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার পর পুনরায় কারও খাদ্য লাগবে কিনা সে ব্যাপারেও রাখছেন নিয়মিত খোঁজ খবর।
সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যে প্রায় দুই হাজার পরিবারকে খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করেছেন। সংগঠনের কর্মীদের পাশাপাশি পরিচালকগণ নিজেরাও বস্তির ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন। এছাড়াও হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রদান করেছেন। জরুরি সেবায় নিয়োজিতদের জন্য তৈরি করেছেন পিপিই।
সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতমাসে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাজধানী ছেড়ে চলে গেলেও সুইচ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের কর্মীরা ঢাকা ছাড়েননি। দেশের ক্লান্তিলগ্নে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের কর্মীরা অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন হতদরিদ্র মানুষগুলোর জন্য। তরুণদের ঘামঝরা এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় আজ হাসছে বস্তির ঘরগুলো।

vod-16042020