করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার আশঙ্কায় বাংলাদেশে আটকে পড়া হাজারের বেশি নাগরিককে ফিরিয়ে নিচ্ছে বৃটেন। আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃটিশ এয়ারওয়েজের পরপর ৪টি ফ্লাইটে তাদের সরানো হবে। বৃটিশ হাইকমিশন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে- ওই সব ফ্লাইটের বেশিরভাগ যাত্রী ছুটি কিংবা প্রয়োজনে এসে আটকে পড়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক। সিলেট অঞ্চলে তাদের অবস্থান। ফলে সিলেট থেকে তাদের ঢাকা অবধি পৌঁছাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ভাড়া করছে বৃটিশ সরকার। যাত্রী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর এবং সিলেটে কতজন অবস্থান করছেন- সেই বিবেচনায় বিমানের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটগুলো ঠিক হবে।
কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা-লন্ডন রুটে ফ্লাইট চালু রাখার জোর তদবির বা চাপ ছিল বৃটেনের।
৭ই এপ্রিলের পর সীমিত পরিসরে হলেও রুটটিতে কমার্শিয়াল ফ্লাইট চালুর আবদার করেছিল দেশটি। কিন্তু না, ঢাকা তার অবস্থানে অনড় থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়েই স্পেশাল ফ্লাইট অ্যরেঞ্জ করে বৃটিশ হাইকমিশন। করোনায় প্রায় লকডাউন অবস্থায় থাকা বৃটিশ এয়ারের বোয়িং উড়োজাহাজ ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বৃটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস। প্রস্তাবিত শিডিউল মতে, ২৩, ২৫ ও ২৬ শে এপ্রিল বৃটেনের দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ ফ্লাইট পরিচালিত হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাই কমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন নাগরিকদের উদ্দেশ্য দেয়া সর্বশেষ ভিডিও বার্তায় বিশেষ ফ্লাইট চূড়ান্ত হওয়ার কথা জানান। ফ্লাইটগুলো আয়োজন করতে পেরে তিনি খুবই আনন্দিত জানিয়ে বৃটিশ দূত বলেন, এসব ফ্লাইট পরিচালনার ব্যয় যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। ঢাকা কিংবা সিলেট যেখান থেকেই নাগরিকরা যাত্রা শুরু করুন না কেন, জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ৬০০ পাউন্ড। আগ্রহীরা করপোরেট ট্র্যাভেল ম্যানেজমেন্ট (সিটিএম) বা ট্র্যাভেল ম্যানেজমেন্ট পার্টনারের মাধ্যমে টিকিট বুক করতে পারবেন।
এদিকে হাই কমিশনের তরফে প্রচারিত সর্বশেষ ভ্রমণ নির্দেশনায় জানানো হয়েছে- ওই বিশেষ ফ্লাইটগুলোতে কেবলমাত্র বৃটেনের সেই সব সিটিজেন যেতে পারছেন, যারা স্থায়ীভাবে দেশটিতে বসবাস করেন। অন্যরা নয়। যাত্রী বোর্ডিংয়ের আগে বিষয়টি অবশ্যই যাচাই করে নেয়া হবে।
এদিকে আগে প্রচারিত এক বার্তায় বৃটিশ দূত বলেন, বিভিন্ন দেশে আটকা নাগরিকদের বৃটেনে ফিরিয়ে নিতে ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিস বিশ্বব্যাপী বেশ বড় আকারের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ফিরিয়ে আনার ওই কার্যক্রমে সেই সব এলাকাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে যেখানে বৃটেনের নাগরিকদের বেশ বড় সংখ্যা আটকা পড়েছেন অথবা আটকা বৃটিশ নাগরিকরা সেখানে চরম ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাদের বৃটেনে দ্রুত ফেরা ছাড়া সুরক্ষার উপায়ই নেই। ঢাকাস্থ বৃটিশ হাইকমিশন বাংলাদেশে আটকা নাগরিকদের বিষয়ে লন্ডনের দৃষ্টি আকর্ষন করছে যেনো, নীতি নির্ধারকরা বাংলাদেশে আটকে পড়া ব্রিটিশ নাগরিকদের দ্রুত বৃটেনে ফেরানোর উদ্যোগে আরও বেশি মনোযোগী হন।