বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার জাভেদ ওমরের বিরুদ্ধে তথ্য পাচারের অভিযোগ এনেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজের প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে এমনটাই। অভিযোগ রয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত সবশেষ প্রমীলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশ নারী দলের তথ্য ফাঁস করেছেন জাভেদ। জাভেদকে আর কোন দায়িত্ব না দিতে নাকি বিসিবিকে অনুরোধও করেছে আইসিসি। তবে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন ও নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেছেন, এ বিষয়ে এমন কিছু জানেন না তারা। অস্বীকার করেছেন জাভেদও। অন্যদিকে বিসিবির আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগটি বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। তবে সেটি বিশ্বকাপ-কেন্দ্রিক নয়। এর আগে বিদেশের মাটিতে একটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজের পরই গুঞ্জনটা ছড়িয়ে পড়ে।
ধারণা করা হচ্ছে, সেটি পাকিস্তান সফরে।
এ নিয়ে সিইও সুজন বলেন, ‘আমাদেরকে আইসিসি এখনো কিছু জানায়নি। বিষয়টা কীভাবে এসেছে ঠিক জানি না। এ ব্যাপারে তারা (আইসিসি) আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’ বাংলাদেশ ক্রিকেটের নারী বিভাগের চেয়ারম্যান শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘আমিও শুনেছি বিষয়টি। কিন্তু এখনো কোনোকিছু লিখিতভাবে আমাদেরকে আইসিসি জানায়নি। নিয়ম অনুসারে বিষয়টি লিখিতভাবে বা চিঠি দিয়েই জানানোর কথা আইসিসির। আমরা এখন পর্যন্ত এমন কিছু পাইনি।’ তবে সিইও নিজামুদ্দিন জানিয়েছেন, সত্যিই যদি তথ্য পাচারের ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করবেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নারী দলের দায়িত্বে ছিল সে, তাই এ ব্যাপারে আমাদের কাছে যদি অভিযোগ আসে, আমরা দেখবো। আমাদের যেহেতু আইসিসি বা আকসুর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়নি; এ মুহূর্তে এটা নিয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’
অনেক দিন ধরে দায়িত্ব পালন করা জাভেদ ওমরের সন্দেহজনক কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়েনি বলেই জানালেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। তিনি বলেন, ‘না, আমার চোখে এমন কোন কিছুই আসেনি। আর সত্যি বলতে তথ্য প্রমাণ ছাড়া কাউকে নিয়ে কিছু বলা যায় না। যদি এমন কিছু হয় আর তা সঠিক নিয়মে আমাদের কাছে আসে, সে অনুযায়ীই বিসিবি ব্যবস্থা নেবে। তার আগ পর্যন্ত এ নিয়ে অফিসিয়ালি আমাদের কিছু করার নেই।’
সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজের প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, এই বছর ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ায় নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন জাভেদ। টুর্নামেন্ট চলাকালে আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটের (আকসু) কড়া নজর ছিল তার ওপর। আইসিসি বলছে, আসর চলাকালে বাংলাদেশ নারী দলের বিভিন্ন তথ্য ফাঁস করেছেন জাভেদ। তবে বিসিবির আরেকটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি ঘটনাটি বিশ্বকাপের সময়ে নয়। অভিযোগটি এসেছে আরো আগেই। সূত্রটি জানায়, ‘আমরা যতটা জানি এই ঘটনা নিয়ে বিশ্বকাপের আগে গুঞ্জন শুরু হয়। যতটা বলতে পারি এটি বিশ্বকাপের আগে কোন দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হয়েছে। তখন থেকেই কানে আসছিল। কিন্তু প্রমাণ ছিল না।’
জাভেদ ওমর বাংলাদেশ ওমেন্স টিমের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ২০১৯ থেকে। চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত তার সঙ্গে চুক্তি ছিল বিসিবির। এই চুক্তি নবায়ন করার কথাও চলছিল। এখন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হলেও যে চুক্তিটা আর নবায়ন হবে না, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।