নভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধের অংশ হিসেবে কভিড-১৯ রোগের লক্ষণ নিয়ে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পাঁচজনকে ‘আইসোলেশনে’ রাখা হয়েছে। তবে তাদের সবার অবস্থাই ভালো বলে জানিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো করোনাভাইরাস নিয়ে মঙ্গলবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সন্দেহভাজন পাঁচ রোগীকে বিচ্ছিন্ন রাখার কথা জানান আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। চীনে কভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল এবং সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট
চালু করে আইইডিসিআর। সেখানে সন্দেহভাজন রোগীকে আলাদা রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।-বিডিনিউজ
ডা. ফ্লোরা বলেন, অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আমাদের হাসপাতালে সব সময়ই আইসোলেশনে থাকে। যখনই আমরা রোগী সন্দেহ করি বা যখনই আমাদের কাছে ফোন কল আসে যে তার মধ্যে লক্ষণ-উপসর্গ আছে, আমরা বিলম্ব না করে তাকে আগে হাসপাতালে পাঠাই। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা তাদের ছাড়ি। আইসোলেশনে থাকা পাঁচজনের সবারই শারীরিক অবস্থা এখন ভালো বলে জানান তিনি।
জরুরি প্রয়োজনে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় আইসোলেশন ইউনিট চালুর নির্দেশনা দিয়েছে আইইডিসিআর। তিনি বলেন, যাতে যদি সন্দেহজনক রোগী থাকে, তাদের নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা করে যেন বলতে পারি। যদি ওই রোগী পজিটিভ হয়, তাকে অন্য হাসপাতালে যেতে হয় তাহলে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে ।
নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ হলে লক্ষণগুলো হয় নিউমোনিয়ার মতো। শুরুটা হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট।
করোনাভাইরাসের কোনো টিকা বা বিশেষায়িত ওষুধ এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে।
মানুষের দেহে ভাইরাস সংক্রমণের পর লক্ষণ দেখা দিতে পারে এক থেকে ১৪ দিনের মধ্যে।
তাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে, এমন দেশ থেকে কেউ এলে তাকে অন্তত ১৪ দিন ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর। সেই সঙ্গে বিমানবন্দরগুলোতে চলছে পরীক্ষা।
ডা. ফ্লোরা জানান, দেশে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে কারও শরীরে নভেল করোনাভাইরাস পাওয়া যায়নি। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৩টি নমুনা।
তিনি বলেন, যাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ বাংলাদেশি। এর মধ্যে চীন ফেরতই বেশি, দক্ষিণ কোরিয়া ফেরতও আছেন। বিদেশি কয়েকজনের নমুনাও পরীক্ষা করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধেই জোর বেশি দিচ্ছে সরকার।
ডা. ফ্লোরা বলেন, ঢাকায় আসা অতিথিদের সম্পর্কে তথ্য দিতে হোটেলগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
